সম্পূর্ণ সূর্যগ্রহণের তুলনায়, যেখানে চাঁদ সম্পূর্ণরূপে সূর্যকে ঢেকে ফেলে, আংশিক গ্রহণে চাঁদের চারপাশে সূর্যের একটি উজ্জ্বল বৃত্ত দৃশ্যমান থাকে।
আকাশপ্রেমীরা কিছু দিন আগে আংশিক চন্দ্রগ্রহণের সৌন্দর্য দেখার পর আবারও এক বিরল মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছেন। ২ অক্টোবর একটি আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে, যাকে সাধারণত ‘রিং অফ ফায়ার’ বলা হয়।
এই মহাজাগতিক ঘটনাটি ঘটবে ঠিক ২ অক্টোবর, যেদিন ভারত মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকী পালন করবে।
সূর্যগ্রহণ ২০২৪:
আংশিক সূর্যগ্রহণ ঘটে যখন চাঁদ পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝে এসে পড়ে, কিন্তু সে সময় চাঁদ পৃথিবী থেকে যথেষ্ট দূরে থাকে এবং সূর্যকে পুরোপুরি ঢাকতে সক্ষম হয় না।
এই গ্রহণের সর্বাধিক বিন্দু হবে ১৮:৪৫ ইউটিসি-তে আর্জেন্টিনার ওপর, যেখানে সৌভাগ্যবান দর্শকরা দেখতে পাবেন সূর্যের মাঝখানে অবস্থান করছে চাঁদ, যা সূর্যকে পুরোপুরি ঢাকতে না পারলেও তার চারপাশে আগুনের বৃত্তের মতো একটি দৃশ্য তৈরি করবে।
রিং অফ ফায়ার গ্রহণ
সম্পূর্ণ সূর্যগ্রহণের মতো চাঁদ এখানে পুরোপুরি সূর্যকে ঢাকবে না। বরং চাঁদের চারপাশে সূর্যের প্রান্ত থেকে উজ্জ্বল আলো দৃশ্যমান থাকবে।
এটি ঘটে কারণ এই সময় চাঁদ তার কক্ষপথের সবচেয়ে দূরের বিন্দুতে অবস্থান করে, যা তাকে সূর্যের তুলনায় ছোট দেখায়। সূর্যের চারপাশে এই উজ্জ্বল বৃত্তই ‘রিং অফ ফায়ার’ বলে পরিচিত।
এই ঘটনায় সূর্যের কেন্দ্রীয় অংশ চাঁদ দ্বারা আবৃত হবে, তবে সূর্যের বাইরের অংশ স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। সম্পূর্ণ সূর্যগ্রহণের সময় সূর্যের পুরো অংশ অদৃশ্য হয়ে গেলেও, এই রিং অফ ফায়ারের সময় সূর্যের কিছু অংশ দৃশ্যমান থাকবে। কিন্তু এই গ্রহণ দেখার সময় সঠিক চোখের সুরক্ষা ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সূর্যের আলো এখনও সরাসরি চোখের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
কোথায় দেখা যাবে?
এই ‘রিং অফ ফায়ার’ গ্রহণের দৃশ্য দেখা যাবে খুব সরু একটি পথে, যা প্রায় ২৬৫ কিলোমিটার প্রস্থের হবে। এই পথটি দক্ষিণ চিলি এবং আর্জেন্টিনার ওপর দিয়ে যাবে এবং শেষ হবে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে ২০:৩৯ ইউটিসি-এর কাছাকাছি।
যদিও এই সরু পথে প্রায় ১,৭৫,০০০ লোক বাস করে, দক্ষিণ আমেরিকার লক্ষাধিক মানুষ আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখতে পাবেন। এছাড়াও, অ্যান্টার্কটিকা, প্রশান্ত মহাসাগর এবং এমনকি হাওয়াই থেকে কিছু অংশ আংশিক গ্রহণ দেখা যাবে।
এই গ্রহণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যবেক্ষণস্থলগুলির মধ্যে একটি হল ইস্টার আইল্যান্ড, যা রাপা নুই নামেও পরিচিত। প্রশান্ত মহাসাগরের এই দূরবর্তী চিলীয় অঞ্চলে সূর্যের ৮৭% পর্যন্ত আচ্ছাদিত থাকবে, যা একটি চমকপ্রদ দৃশ্য তৈরি করবে।