মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন সায়গল, পেছনে পঙ্কজকুমার মল্লিক। সায়গলের পুরো নাম কুন্দনলাল সায়গল। মোটরবাইকের ভটভট শব্দকে তাল ও স্কেল ধরে সে গাইছে, ‘শারদ প্রাতে আমার রাত পোহাল…।’ রবীন্দ্রসংগীতটি মাত্রই কণ্ঠে তুলেছেন। নিজে তো গাইছেনই, পঙ্কজকেও বলছেন, ‘তুইও গা।’ উত্তরে পঙ্কজ বললেন, ‘ঠিক করে করো, ওখানটায় ভুল হচ্ছে…ঠিক হলো না…।’ ভাঙা উঁচু-নিচু রাস্তায় মোটরসাইকেলের ঝাঁকুনিতে পঙ্কজ পড়ে যায়। ভাগ্য ভালো, কোনো ধরনের আঘাত পাননি। ধাতস্থ হতে না হতেই দেখলেন, গান গাইতে গাইতে সায়গল নাগালের বাইরে। গানে এত মশগুল ছিলেন যে বুঝতেই পারেননি, পঙ্কজ পেছনে নেই। যখন পারলেন, উদ্বিগ্ন হয়ে পঙ্কজের বাড়ি গেলেন। পঙ্কজকে ঠিকঠাক দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন। দুজনই ঘটনা নিয়ে হাসাহাসি করলেন। পঙ্কজের পড়ে যাওয়া দুজনের কাছেই হাসির স্মৃতি হয়ে রইল।

এবং রবীন্দ্রনাথ
রবীন্দ্রনাথের গান গাওয়ার জন্য বাংলা না জানা সায়গলকে কিছু কাজ করতে হয়েছিল। ১৯৩০–এর দশকের প্রথম দিকে কলকাতায় এসে গজল গেয়ে যাত্রা শুরু করেন। ক্রমান্বয়ে বাংলার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেন। বাংলা ও বাংলা গানকে ভালোবেসে ফেলেন। রবীন্দ্রনাথের গান শুনে মুগ্ধ হন। তত দিনে সায়গলের কণ্ঠের, গায়কির প্রচণ্ড ভক্ত হয়ে গেছেন পঙ্কজ। তিনি ভাবলেন, এমন কণ্ঠ দিয়ে যদি রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ানো যায়, তবে সবার ভালো লাগবে। সায়গলের বাংলা উচ্চারণ ও যুক্ত অক্ষরের উচ্চারণ নিয়ে পঙ্কজ কিছু কাজ করলেন। এরপর সায়গল গাইলেন জীবনের প্রথম রবীন্দ্রসংগীত, ‘প্রথম যুগের উদয়দিগঙ্গনে…।’ তিনিই প্রথম অবাঙালি, যাঁকে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রসংগীতকে জনপ্রিয় করার পেছনে সায়গলেরও অবদান আছে। শুধু এই এক কারণে হলেও রবীন্দ্রভক্ত ও বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকতেন।

রবীন্দ্রসংগীতের বাইরেও তিনি বাংলা গান গেয়েছেন। হিন্দি ও উর্দু ভাষায় গান গেয়েছেন। তাঁর সব ধরনের গানই সেই সময় বিপুলভাবে শ্রোতৃপ্রিয় হয়। বিশেষ করে সিনেমায় অভিনয় ও গান—দুটোতেই তিনি মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই করে নিয়েছিলেন। তাঁর গানের ভক্ত ছিলেন পরবর্তী প্রজন্মের মোহাম্মদ রফি, মুকেশ, কিশোর কুমার, লতা মঙ্গেশকরসহ সেই সময়ের জনপ্রিয় প্রায় সব গায়ক–গায়িকা।

সায়গলকে পাওয়া গেল যেভাবে
কুন্দনলাল সায়গলকে কে আবিষ্কার করেছিলেন, তা নিয়ে বেশ কিছু মতামত পাওয়া যায়। একটি মত, একদিন বিকেলে মেট্রো সিনেমার উল্টো দিকের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে সায়গল গুনগুন করছিলেন, একই দোকানে প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক রাইচাঁদ বড়াল সিগারেট কিনছিলেন। গান শুনে রাইচাঁদ চোখ তুলে তাকালে সায়গল গান বন্ধ করে দেন। মজার ব্যাপার, ধ্রুপদি শিল্পী পণ্ডিত হরিশচন্দ্র পরদিনই সায়গলকে নিয়ে রাইচাঁদের কাছে গেলেন। তিনি রাইচাঁদকে প্রথমেই বললেন, গজল গাইলেও উচ্চাঙ্গসংগীত চর্চা করেননি। রাইচাঁদ হতাশ হলেও গান শুনতে চাইলেন। সায়গল গান ধরতেই তিনি বুঝতে পারলেন, আগের দিন দোকানে দাঁড়িয়ে এই গানই তিনি শুনতে পেয়েছিলেন। সন্তুষ্ট রাইচাঁদ তাঁকে নিয়ে নিউ থিয়েটারসের কর্ণধার বি এন সরকারের কাছে নিয়ে যান। সেখানে মাসিক ২০০ টাকা বেতনে সায়গলের গান ও অভিনয়ের ব্যবস্থা হয়। অন্যদিকে সায়গলের বন্ধু পঙ্কজের মতে, সায়গল নিজেকে নিজেই প্রকাশ করেছেন।

অল্প বয়সেই রেমিংটন কোম্পানিতে চাকরি নিয়েছিলেন। গত শতকের ত্রিশের দশকের শুরুর দিকে ছুটি নিয়ে কলকাতায় আসেন (অন্য মত হচ্ছে, কোম্পানির কাজেই ওই সময় তিনি কলকাতায় এসেছিলেন)। এই সফরেই একদিন কলকাতা বেতার অফিসে এলেন। উদ্দেশ্য বেতারে গান গাওয়া। প্রোগ্রাম ডিরেক্টর নৃপেন মজুমদার সায়গলের অডিশন নেওয়ার দায়িত্ব দিলেন পঙ্কজকুমার মল্লিককে। সায়গল পাঞ্জাবের ছেলে। হিন্দি ও উর্দু বলতেন। ইংরেজিও জানতেন। গজল, ভজন ও ঠুংরির ওপর তাঁর ভালো দখল ছিল। বাংলা জানতেন না। সায়গলকে গানের ঘরে নিয়ে গাইতে বললেন। গান শুনে মুগ্ধ পঙ্কজ। নৃপেন মজুমদারকে নিজ কানে গান শোনার আহ্বান জানালেন। নৃপেন এলেন সঙ্গে রাইচাঁদকে নিয়ে। দুজনই গান শুনে চমৎকৃত হলেন। নৃপেন বললেন, ‘ওহে, ছেলেটাকে আজই মাইক্রোফোনে বসিয়ে দাও।’ সায়গলের গান সেদিন সন্ধ্যায় প্রচারিত হলো। তিনি দুটি গজল গেয়েছিলেন।

বেতারের প্রথম যুগে এমনই হতো। তখন প্রথমে রেকর্ডিং, তারপর প্রচার, এমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। অডিশনে পাস করলে সরাসরি মাইক্রোফোনে বসিয়ে দেওয়া হতো। শিল্পী প্রতিভাবান হলে নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম বাদ দিয়েও শিল্পীকে গাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হতো। সেই সময় পর্যন্ত সিনেমায় প্লেব্যাক প্রথা চালু হয়নি।

পঙ্কজ মনে করলেন, সায়গলের মধ্যে গায়ক ও অভিনেতার সব গুণ আছ। এই বিষয়ে তিনি রাইচাঁদ বড়ালের সঙ্গে পরামর্শ করে সায়গলকে সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব দিলেন। সায়গল রাজি হলেন। অচিরেই সায়গল নিউ থিয়েটারসে যোগ দেন এবং সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। প্রথম অভিনয় করলেন উর্দু ছবি ‘মহব্বত কি আসু’তে। ১৯৩২-এ ছবিটি মুক্তি পায়। বাংলা ছবিও তাঁকে আকর্ষণ করত। ইতিমধ্যে কলকাতার জীবনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা সায়গল বাংলা শিখলেন। বাংলা ছবিতেও অভিনয় শুরু করলেন।

অভিনয়ের সায়গল
‘দেবদাস’ ছিল তাঁর অভিনীত প্রথম বাংলা ছায়াছবি। শরৎচন্দ্রের কাহিনি নিয়ে ১৯৩৫ সালে, নিউ থিয়েটারসের প্রযোজনায় প্রমথেশ বড়ুয়া ‘দেবদাস’ তৈরি করেন। তিনিই দেবদাস চরিত্রে অভিনয় করেন। ‘দেবদাস’-এর সংগীত পরিচালনা করেন পঙ্কজ, রাইচাঁদ ও তিমির বরণ। ছবিতে চন্দ্রমুখীর বাসায় মোসাহেবের চরিত্রে সায়গল দুটি বাংলা গান গেয়েছিলেন—‘কাহারে জড়াতে চাহে দুটি বাহুলতা’ ও ‘গোলাপ হয়ে উঠুক ফুটে তোমার রাঙা কপোলখানি’। গান দুটি ছিল সেই সময়ের সাড়াজাগানো গান।

১৯৩৬ সালে প্রমথেশ পরিচালিত হিন্দি ভাষায় ‘দেবদাস’ মুক্তি পায়। হিন্দি ‘দেবদাস’-এ সায়গল দেবদাসের ভূমিকায় অভিনয় করেন। তিমির বরণের সংগীত পরিচালনায়, কিদার শ্যামার লেখা দুটি গানে কণ্ঠ দেন। এই ছবি সায়গলকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়।

নিউ থিয়েটারসের সেই সময়ের তুমুল হিট বাংলা ছায়াছবি ‘জীবন মরণ’-এর মূল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সায়গল। ছবির নায়িকার ভূমিকায় ছিলেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী লীলা দেশাই। পঙ্কজ সংগীত পরিচালনা করেন। সায়গল গেয়েছিলেন ‘পাখি আজ কোন কথা কয় শুনিস কিরে’ ও ‘এই পেয়েছি অনলজ্বালা’। দুটি গানই অজয় ভট্টচার্যের লেখা। এই দুই গানের সঙ্গে আরও গেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথের ‘তোমার বীণায় গান ছিল আর আমার ডালায় ফুল ছিল গো’। এই চলচ্চিত্র বাংলা সিনেমায় সায়গলের আসন সুদৃঢ় করে।

নানা রকম সায়গল
নওয়াব ওয়াজিদ আলী শাহর প্রখ্যাত ঠুমরি ‘বাবুল মোরা’। এই গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাস। ১৬০ বছরের বেশি সময়জুড়ে এই গান চর্চায় আছে। ১৯৩৮-এ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘স্ট্রিট সিঙ্গার’ সিনেমায় যখন সায়গল গানটি গাইলেন, তখন সারা ভারতেই তোলপাড় শুরু হয়। সায়গলের গায়কির কারণে গানটি ভিন্নমাত্রায় উপনীত হয়। বিভিন্ন প্রজন্মের শিল্পীরা এই গান গেয়েছেন, এখনো গাইছেন। এই তালিকায় ভীম সেন জোসি, ওস্তাদ ফইয়াজ খান, বেগম আখতার থেকে শুরু করে জগজিৎ সিং, অরজিৎ সিংও আছেন কিন্তু এখনো সায়গলের গাওয়া গানই সবার ওপরে আছে।

তখন প্লেব্যাক কৌশল জানা হয়ে গেছে, তারপরও সায়গল অভিনয়ের সময়ই স্বকণ্ঠে গানটি গাইলেন। ছবির দৃশ্যে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে গানটি গাইতে দেখা যায়। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে সুরে এই গান গাওয়া যেমন কঠিন, রেকর্ড করাও তেমন কষ্টসাধ্য। কিন্তু কাজটি সায়গল খুব চমৎকারভাবে করেছিলেন, এটা সম্ভব হয়েছিল গানের সঙ্গে শতভাগ একাত্ম হয়ে যেতে পারার অদ্ভুত গুণের কারণে।

সিনেমায় গান পেলেই সায়গল গেয়ে দিতেন না, চিন্তাভাবনা করতেন। তেমন গান পেলে সে গানের জন্য তিনি অতিরিক্ত শ্রম ও সময়ও দিতেন। ‘বাবুল মোরা’ গানের বেলায় আমরা তাঁর এই গুণের কথা জানতে পারি।

সেই সময়ের অনেক শিল্পীই লক্ষ্ণৌর প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ শ্যামভুজি মহারাজের ছাত্র ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন জগমোহন, যিনি সুরসাগর নামেই মূলত পরিচিত ছিলেন। তাঁর স্মৃতিচারণা থেকে জানা যায়, ‘একদিন মহারাজের কাছে এক যুবক এলেন। বয়স আনুমানিক ৩০। তিনি এসেছিলেন “বাবুল মোরা” গানটি যথাযথভাবে শিখতে। মহারাজ তাঁকে তিন দিনে গানটি শিখিয়ে দিলেন। সুরসাগর অল্পস্বল্প রাগ করলেন। মহারাজের কাছে জানতে চাইলেন, তিনি বলেছিলেন এই গান শিখতে ছয় মাস সময় লাগবে। তাহলে এই যুবক মাত্র তিন দিনে কীভাবে গানটি শিখে ফেললেন? মহারাজ উত্তর দিয়েছিলেন, “তুমি জানো এই যুবক কে ছিলেন? এই যুবক হচ্ছেন কুন্দনলাল সায়গল।”’

এই কথা সবাই এক বাক্যে স্বীকার করেন যে হিন্দি সিনেমা ও হিন্দি গানের পাশাপাশি বাংলা সিনেমা ও বাংলা গানেরও প্রথম সুপারস্টার ছিলেন সায়গল। আমরা এভাবেও বলতে পারি, গানে ও অভিনয়ে উপমহাদেশের প্রথম সুপারস্টার হচ্ছেন সায়গল।

সায়গল বেশুমার জনপ্রিয় গায়ক ও অভিনেতা। কিন্তু কিছুমাত্র অহংকারও তাঁর মধ্যে ছিল না। সহকর্মীদের জন্য ছিল অগাধ ভালোবাসা, স্নেহ, শ্রদ্ধা। মালি, দারোয়ান যেই সামনে পড়তেন, একগাল হেসে জিজ্ঞেস করতেন, ‘কেয়া খবর? তবিয়ত আচ্ছা হ্যায়?’
গান সলো হোক, ডুয়েট হোক কিংবা কোরাস, সেই যুগে রেকর্ডিংয়ের সময় একটি মাইক্রোফোনই ব্যবহৃত হতো। ডুয়েট বা কোরাস গানে মাইক্রোফোনের কাছে থাকার জন্য সবার মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিল। এই দৌড়ে সায়গল কখনো শামিল হতেন না। তিনি সহশিল্পীকে মাইক্রোফোনের সামনে ঠেলে দিতেন। কাননদেবী স্মৃতিচারণা করেছেন, ‘আমার আর সায়গলের ডুয়েট গান টেকের সময় উনি চট করে সরে গিয়ে মাইক্রোফোনের দিকে আমাকেই ঠেলে দিতেন। আমি লজ্জিত হয়ে আপত্তি করলেই পিঠ চাপড়ে দিয়ে বলতেন, “কোই বাত নেহি, আপনি গান তো।” ক্যামেরার বেলাতেও তা–ই। কোনো শট নেওয়ার সময় হয়তো এমনভাবেই দাঁড়াতেন যে কারও নজরেই এলেন না। এ নিয়ে আমি কিছু বলতে গেলেই আমার দিকে আঙুল দেখিয়ে, “আরে দূর! দেখার মতো জিনিসকে লোকে দেখতে পেলেই হলো,” বলেই সারা স্টুডিও চমকানো তাঁর সেই উচ্চ হাসির গমক কি ভোলার? এমন আত্মভোলা মহত্ত্ব আর কারও মধ্যে দেখেছি বলে মনে পড়ে না।’

সায়গলকে নিয়ে স্মৃতিচারণায় পঙ্কজ লিখেছেন, ‘আজ এত দিন পরে তার কথা লিখতে বসে আমার “প্রাণের শ্রবণে” ধ্বনিত হচ্ছে তারই গাওয়া রবীন্দ্রগীতির সুমধুর কলি—“সেই কথাটি কবি পড়বে তোমার মনে, বর্ষামুখর রাতে ফাগুনে সমীরণে।” তার চেয়ে সার্থকভাবে এ গান গেয়ে শোনানোর মতো আজ আর কোনো শিল্পী আছেন?’ সায়গলের গায়কি সম্পর্কে তালাত মাহমুদ বলেন, ‘কি উচ্চারণ, কি তাঁর কণ্ঠস্বর, কী দারুণ গভীরতা, কণ্ঠের ওপর কী দারুণ নিয়ন্ত্রণ, তাঁর কাছাকাছি যেতে পারিনি আমি!’
ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে সিনেমার শিল্পীরা মনে করতেন, সায়গলের মতো গান করতে পারলেই গায়ক হিসেবে সাফল্য আসবে। তাই শুরুতে অনেকেই সায়গলের কণ্ঠ-গায়কিকে অনুসরণ করতেন। ১৯৪৭ সালের ছবি ‘পেহলি নজর’–এর মন ছুঁয়ে যাওয়া গান ‘দিল জ্বলতে হে তো জ্বলনে দো’ দিয়ে মুকেশের ক্যারিয়ার শুরু হয়। এই গানের গায়কি সায়গলের কণ্ঠ ও গায়কির মতো এতটাই ছিল যে সায়গলকে এই গান শোনানো হলে সায়গল মন্তব্য করেছিলেন, ‘এটা আবার কবে গাইলাম, মনেও তো করতে পারছি না!’

১৯০৪ সালের আজকের দিনে, অর্থাৎ ১১ এপ্রিল জম্মুতে সায়গলের জন্ম। বাবা অমরচাঁদ সায়গল তহশিলদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মা কেশর দেবী। জম্মু–কাশ্মিরের রণবীর সিংহ হাইস্কুলে এবং প্রিন্স ওয়েলস কলেজে (বর্তমানে গান্ধী মেমোরিয়াল সায়েন্স কলেজ) তিনি পড়াশোনা করেন। তাঁর ক্যারিয়ার নির্ধারণী হিট সিনেমা ‘দেবদাস’-এর মুক্তির বছরেই তিনি আশারানিকে বিয়ে করেন। ১৯৪৭ সালের ১৮ জানুয়ারি মাত্র ৪২ বছর বয়সে কুন্দনলাল সায়গল মৃত্যুবরণ করেন।