দেশে ই-বর্জ্যের সোনা, রুপা, কপার, টিন, নিকেল চলে যাচ্ছে দেশের বাইরে। ইলেকট্রনিক পণ্যের প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড (পিসিবি), র্যামে থাকা মূল্যবান ধাতুগুলো পুনঃপ্রক্রিয়াজাত (রিসাইকেল) করতে না পারায় রপ্তানি করতে হচ্ছে।
তবে ই-বর্জ্যের তুলনামূলকভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ ধাতব, পলিমার ও ফাইবার আলাদা করে বিক্রি করা হচ্ছে দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে। মূল্যবান ধাতুগুলোও একইভাবে আলাদা করতে পারলে দেশেই রাখা যেত, বাড়ত ই-বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা। দেশে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবহার বেড়েছে। লন্ডনভিত্তিক গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএস) এর চলতি বছরের মার্চের এক প্রতিবেদন অনুসারে বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন সংযোগের সংখ্যা ১৭ কোটি। এ ছাড়া বাড়ছে ল্যাপটপ ও ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহারকারীর সংখ্যা।
আর টেলিভিশন, ফ্রিজের মতো ইলেকট্রনিক পণ্য, জাহাজভাঙা শিল্প, মুঠোফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর টাওয়ার-সার্ভারসহ অজস্র পণ্যের ব্যবহার বাড়ছে। বছরে দেশে কয়েক লাখ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য উৎপাদিত হয় বলে ধারণা এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের। যদিও ই-বর্জ্য নিয়ে বাংলাদেশে কোনো গবেষণা নেই। শুধু জেআর রিসাইক্লিং সলিউশন লিমিটেডই চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ৮৭ মেট্রিক টন অব্যবহৃত বা নষ্ট ধাতব পদার্থ সংগ্রহ করে নকিয়ার কাছ থেকে। দেশের মুঠোফোন প্রতিষ্ঠানগুলোর টাওয়ারের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে নকিয়া। নষ্ট বা ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়া এসব পণ্যই ই-বর্জ্য বা ইলেকট্রনিক বর্জ্য হিসেবে পরিচিত।
সংগৃহীত ই-বর্জ্য তিনটি ধাপে পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করা হয়—চূর্ণ করা (ডিজমেন্টাল), যন্ত্রাংশ আলাদা করা (সেগ্রেগেশন) ও যন্ত্রাংশের প্রতিটি ধাতু আলাদা করা (সেপারেশন)। দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথম দুটো করলেও ধাতু আলাদা করার কাজটি পুরোপুরি করে না, বিশেষ করে মূল্যবান ধাতু। ফলে ই-বর্জ্য সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিবছর কয়েক শ টন পিসিবি, র্যাম বিদেশে রপ্তানি করতে হচ্ছে।