কমনওয়েলথ বৃত্তি ২০২৩-এর জন্য দরখাস্ত আহ্বান করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। যুক্তরাজ্যে ফুলফ্রি স্কলারশিপ নিয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত।
যুক্তরাজ্য সরকারের কমনওয়েলথ বৃত্তি বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক বৃত্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর শুরু হয় ১৯৮৩ সালে। এ প্রোগ্রামের অর্থায়ন করে ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি)। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী কমনওয়েলথ বৃত্তি ও ফেলোশিপ পেয়েছেন। প্রতিবছর প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থীকে এ বৃত্তি দেওয়া হয়। কমনওয়েলথের আওতাধীন হওয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। সাধারণত, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তির মাধ্যমে মাস্টার্সে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দেয় কমনওয়েলথ বৃত্তি।
আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে ইউজিসি বরাবর আবেদন করতে পারবেন। কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে প্রার্থীরা চূড়ান্তভাবে এ বৃত্তির জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন।
কমনওয়েলথ বৃত্তি পেলে কী কী আর্থিক সুবিধা মেলে
১.
স্নাতকোত্তর বা পিএইচডির সম্পূর্ণ টিউশন ফি বহন করবে কমনওয়েলথ কমিশন।
২.
যুক্তরাজ্যে যাওয়া-আসার বিমানের টিকিট।
৩.
লন্ডনের বাইরে থাকলে মাসিক ভাতাও মিলবে।
৪.
মাসিক ভাতার বাইরেও এককালীন অর্থ পাওয়া যাবে।
৫.
‘স্টাডি ট্রাভেল গ্র্যান্ট’ ও ‘থিসিস গ্র্যান্ট’ হিসেবে অর্থ মিলবে এ বৃত্তি পেলে।
কমনওয়েলথ বৃত্তির পরিচিতি
১৯৫৯ সালে যাত্রা শুরু করে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন (সিএসসি)। এখন পর্যন্ত কমনওয়েলথ বৃত্তি ও ফেলোশিপ পেয়েছেন ৩৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। কমনওয়েলথভুক্ত ৫৩টি দেশের তরুণ শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের জন্য দেওয়া হয় ৮০০টি বৃত্তি (স্নাতকোত্তর, পিএইচডি ও স্প্লিট-সাইট স্টাডি)। কমনওয়েলথ কমিশন সচিবালয়, লন্ডনের মাধ্যমে আর্থিক অনুদান দেয় যুক্তরাজ্য সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগ (ডিএফআইডি)।
কীভাবে জানবেন বৃত্তির তথ্য
www.cscuk.dfid.gov.uk-তে ঢুঁ মারলে কমনওয়েলথ বৃত্তিসংক্রান্ত বেশির ভাগ তথ্য পাওয়া যাবে। এটি এই বৃত্তির অফিশিয়াল ওয়েবপেজ। www.ugc.gov.bd বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য ইউজিসি প্রতিবছর কমনওয়েলথ স্কলারশিপের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দরখাস্ত আহ্বান করে। যে কেউ ইউজিসির ওয়েবসাইট থেকে বৃত্তিসংক্রান্ত সার্কুলারসহ বিস্তারিত জানতে পারবেন।
প্রয়োজনীয় নথি
পাসপোর্টের কপি, এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, একাডেমিক সব সার্টিফিকেট ও মার্কশিটের সত্যায়িত কপি, রেফারেন্স লেটার ও জীবনবৃত্তান্ত। এ ছাড়া প্রকাশনার বর্ণনা এবং আইইএলটিএস স্কোরের সনদ (যদি থাকে)।
আবেদনের যোগ্যতা
কমনওয়েলথভুক্ত দেশের নাগরিক হতে হবে, নেতৃত্বের ক্ষমতা থাকতে হবে, আর্থিক প্রয়োজনীয়তার কারণ দেখাতে হবে, একাডেমিক ফল ভালো হতে হবে, একটি গবেষণা পরিকল্পনা থাকতে হবে, দ্বিতীয় মাস্টার্স করতে চাইলে কারণ দর্শাতে হবে। যুক্তরাজ্যে কেউ শিক্ষারত অবস্থায় এ স্কলারশিপের জন্য বিবেচিত হবেন না।
আবেদনের প্রক্রিয়া
উন্মুক্তর ক্ষেত্রে ইউজিসির ওয়েবসাইট থেকে আবেদনের নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে এসএসসি, এইচএসসি, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের (যদি থাকে) গ্রুপ/বিষয়, পাসের বছর, মোট নম্বর/জিপিএ/সিজিপিএ ও প্রাপ্ত নম্বরের শতকরা হার উল্লেখ করে সত্যায়িত সনদ, ট্রান্সক্রিপ্টসহ জমা দিতে হবে। এ ছাড়া আবেদনকারীর যদি কোনো প্রকাশনা থাকে, তার বর্ণনা, আইইএলটিএস স্কোর (যদি থাকে) ও এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি দরখাস্তের সঙ্গে সংযুক্ত করে এ ঠিকানায় পাঠাতে হবে: বরাবর, সচিব, উচ্চশিক্ষা কমিশন, আগারগাঁও প্রশাসনিক ভবন এলাকা, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭। এ বছর পাঠাতে হবে ১২ অক্টোবরের মধ্যে।
আবেদনের ক্ষেত্রে সতর্কতা
অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ দরখাস্ত বাতিল হিসেবে গণ্য করবে ইউজিসি। তাই আবেদনের ক্ষেত্রে আন্তরিক হতে হবে।